Monday, April 24

হামলা-আতঙ্কের মধ্যে ফ্রান্সে ভোট

 

ফ্রান্সে জঙ্গি হামলার আশঙ্কা ও আতঙ্কের মধ্যেই প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রথম দফা ভোট দিলেন প্রায় চার কোটি ৬৮ লাখ ভোটার। গতকাল রোববার স্থানীয় সময় সকাল ৭টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ভোট চলে। এর ঘণ্টাখানেক পর থেকেই আংশিক ফল প্রকাশ হওয়ার কথা। এবার প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, প্রায় ৬৯.৪২ শতাংশ ভোট পড়েছে। গতকাল রাতেই টেলিগ্রাফের এক খবরে কিছু বুথফেরত জরিপে মধ্যডানপন্থি ইমানুয়েল মাক্রোন কট্টর ডানপন্থি ম্যারিন লি পেনের চেয়ে এগিয়ে রয়েছেন বলে জানানো হয়েছে, যদিও তথ্য-উৎস স্পষ্ট নয়। নির্বাচন বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন, সর্বশেষ জরিপে সবেচেয়ে জনপ্রিয় চার প্রার্থীর মধ্যে লড়াই হাড্ডাহাডি হবে। কোনো প্রার্থীর পক্ষেই একেক সংখ্যা গরিষ্ঠতা অর্জন সম্ভব হবে না। তাই স্বাভাবিকভাবেই এই চারজনের যে কোনো দু'জনের দ্বিতীয় দফা ভোটে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আগামী ৭ মে অনুষ্ঠিত হবে দ্বিতীয় দফা ভোট। খবর :গার্ডিয়ান, বিবিসি, সিএনএন ও এএফপি।

ফ্রান্সের এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীর সংখ্যা ১১ জন। তবে মূল লড়াই হচ্ছে ন্যাশনাল ফ্রন্ট পার্টির কট্টর ডানপন্থি নেত্রী ম্যারিন লি পেন, এন মার্সে পার্টির মধ্য ডানপন্থি ইমানুয়েল মাক্রোন, সোশালিস্ট পার্টির চরম বামপন্থি জঁ্য-লুক মিলেঁশোঁ ও রিপাবলিকান পার্টির মধ্যডানপন্থি নেতা ফ্রাঁসোয়া ফিয়োঁর মধ্যে। লি পেন ও জঁ্য-লুক মেলেঁশোঁ অবশ্য জনপ্রিয়তার বিচারে এগিয়ে রয়েছেন বলে জরিপে দেখা গেছে।

মাত্র দু'দিন আগে রাজধানী প্যারিসের প্রাণকেন্দ্র এক পুলিশ কর্মকর্তা জঙ্গি হামলায় প্রাণ দিলেন। তার ওপর শনিবার প্যারিসের গেয়ার দ্যু-নরদ স্টেশনে ছুরি হাতে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ফলে জঙ্গি হামলার আতঙ্ক আর আশঙ্কা এখন তাড়া করছে দেশটিকে। এ পরিস্থিতিতে গতকাল নির্বাচনের দিন নেওয়া হয় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। প্রায় ৬৭ হাজার ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নিয়োগ করা হয় ৫০ হাজার পুলিশ এবং ৭ হাজার সেনা সদস্য। এরই মধ্যে জঙ্গি হামলার আশঙ্কায় পূর্বাঞ্চলের বেসাঁকোঁ শহরের একটি কেন্দ্রের কাছে একটি গাড়ি পড়ে থাকতে দেখে ওই কেন্দ্রের ভোট স্থগিত করা হয়েছে। তা ছাড়া জঙ্গি হামলার ষড়যন্ত্রকারী সন্দেহে দুই নাগরিককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

নির্বাচনের প্রধান ইস্যু কর্মসংস্থান ও দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন। তবে ভোটের দু'দিন আগের সন্ত্রাসী হামলা নতুন করে নিরাপত্তার বিষয়টিকে বড় ইস্যু করে তুলেছে। অন্যদিকে প্রধান চার প্রার্থীর মধ্যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ফ্রাঁসোয়া ফিয়োঁ দুর্নীতির অভিযোগে জরিপে একটু পিছিয়ে রয়েছেন। প্রথম দফার ভোটে প্রার্থীদের মধ্যে কেউ একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেলে আগামী ৭ মে দ্বিতীয় দফা ভোট অনুষ্ঠিত হবে।

ফ্রান্সের পূর্বাঞ্চলে বেসাঁকোঁ শহরের একটি ভোটকেন্দ্রের কাছে সন্দেহভাজন একটি গাড়ি পড়ে থাকতে দেখে ওই কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ স্থগিত করেছে নির্বাচন কর্তৃপক্ষ। ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গাড়িটির ইঞ্জিন ড্রাইভিং মুডে ছিল। তাতে কোনো চালক ছিল না। এই গাড়িটি চুরি হয়েছিল এবং এর নম্বর প্লেট পরিবর্তন করে ভুয়া নম্বর লাগানো হয়। এবারের নির্বাচনে ফ্রান্সের বর্তমান সমাজতন্ত্রী প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাদঁ খুবই অজনপ্রিয় হয়ে পড়ার কারণে দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচনে প্রার্থী হননি। আধুনিক ফ্রান্সের ইতিহাসে এমন ঘটনা এই প্রথম ঘটল।


No comments:

Post a Comment