Monday, April 24

এবার মালদ্বীপে খুন হলো মুক্তমনা ব্লগার রশিদ

 

সাজ্জাদুল হক : শুধু বাংলাদেশেই নয়। এবার মালদ্বীপের রাজধানী মালেতে ইয়ামিন রশিদ (২৯) নামের এক মুক্তমনা ব্লগারকে ছুরি মেরে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। তাঁর বুকে ও ঘাড়ে মিলিয়ে মোট ১৬টি আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। হাসপাতালে নেয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই তাঁর মৃত্যু হয়। রশিদ গণমাধ্যমের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
রোববার মালেতে গুরুতর আহত অবস্থায় তার অ্যাপার্টমেন্টের সিঁড়িতে পড়ে থাকতে দেখা যায়। গত পাঁচ বছরে এই নিয়ে তিন জন ব্লগার এমন হামলার স্বীকার হলেন। তারমধ্যে ২০১২ সালে ইসমাইল রশিদ নামে এক ব্যক্তির উপর হামলা চালানো হয়। ২০১৪-র আগস্টে মিনিভান নিউজের আহমেদ রিলওয়ান নামে এক সাংবাদিককে অপহরণ করা হয়। তারপর থেকে আজও তাঁর খোঁজ মেলেনি।
রশিদের ব্লগের নাম ‘দ্য ডেইলি প্যানিক’। ব্লগে তাঁর পরিচয়, অবাধ্য লেখক। তিনি লিখেছেন, ‘‘খবর তো দেবই। আশা রাখি, তার সঙ্গে মলদ্বীপের কেঠো রাজনীতি নিয়ে বিদ্রুপাত্মক কিছু লেখার।’’
তিনি মুসলিমদের প্রতি আক্রমণাত্মক লেখা লিখতেন। তাছাড়া, সরকারের সমালোচনা তো থাকতই। ২০১৪-র অগস্ট থেকে নিখোঁজ হয় রশিদের আর এক বন্ধু সমালোচক ও ব্লগার আহমেদ রিলওয়ান। মলদ্বীপ ডেমোক্রেটিক পার্টির দাবি, রিলওয়ানকে খুঁজে বার করতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করছিলেন রশিদ।
দেশের তথ্যের অধিকার আইনের আওতায় পুলিশি তদন্তের খুঁটিনাটি জানার জন্য সরকারের কাছে আবেদন করেন তিনি। রিলওয়ানের পরিবার ও রশিদ একসাথে মলদ্বীপের পুলিশের বিরুদ্ধে মামলাও করেন। সরকার-বিরোধী প্রতিবাদে সামিল হওয়ায় ২০১৫-য় তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। রশিদ কয়েক বার প্রাণনাশের হুমকিও পেয়েছিলেন। গত ডিসেম্বরে পুলিশের কাছে এই নিয়ে অভিযোগ জানিয়েছিলেন বলেও জানা গিয়েছে।
রশিদের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই দেশ জুড়ে বিক্ষোভের আগুন জ্বলছে। মলদ্বীপের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ও বিরোধী নেতা মহম্মদ নশিদ টুইটে লিখেছেন, এক সাহসী কণ্ঠকে নির্মম ভাবে চুপ করিয়ে দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে ওই প্রেসিডেন্ট স্বেচ্ছা নির্বাসনে রয়েছেন। রাষ্ট্রপুঞ্জ এবং আমেরিকা, ব্রিটেন ও কানাডার দূতাবাস থেকেও এই হত্যার নিন্দা করা হয়েছে।
মুসলিম অধ্যুষিত মলদ্বীপে ধর্মের নামে গোঁড়ামি ও কট্টর ভাবধারার মূলে কুঠারাঘাত করাই ছিল রশিদের মতো ব্লগারদের উদ্দেশ্য। তাঁদের এমন পরিণতিতে চিন্তিত দেশের শিক্ষিত সাধারণ মানুষ।

No comments:

Post a Comment